মাদ্রাসায় ৬ ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ায় শিক্ষক আটক
অনলাইন ডেস্ক।।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ৬ ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাত ৯টার সময় ওই শিক্ষককে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়। রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর উপজেলার বামনী ইউপির কাজের দিঘিরপাড় আলিম মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ৬ ছাত্রের চুল কেটে দেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও শুক্রবার সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
শুক্রবার দুপুরে রায়পুর থানার এসআই কামাল মাদ্রাসায় গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সুপার, ভুক্তভোগী ছাত্র, তাদের অভিভাবক ও অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পান।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নাজমুল আলম, ফজলে রাব্বীসহ কয়েকজন জানায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর তাদের ইংরেজি ক্লাস চলছিল।
এ সময় হঠাৎ সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির উপস্থিত হয়ে কাঁচি দিয়ে ৬ ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেন। ঘটনার পর ছাত্ররা ক্লাস না করে শ্রেণীকক্ষ থেকে বেরিয়ে যায়। পরবর্তীতে মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় ছাত্ররা ক্লাসে ফেরে।
চুল কাটার ঘটনা স্বীকার করে মাদ্রাসার শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির বলেন, সকল ছাত্রকে পরীক্ষার আগের দিন চুল কেটে মাদ্রাসায় আসতে বলি। দাখিলের কয়েকজন ছাত্র কমিটির চার শিক্ষকের কথার অবাধ্য হওয়ার কারণে কয়েকজনের চুল কেটে দিয়েছি।
তাদেরকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নভাবে থাকা ও নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার জন্যই তিন শিক্ষকের উপস্থিতিতে চুল কেটে দিয়েছি। একটা পক্ষ মাদ্রাসার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।
ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক কামাল হোসেন বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে শুক্রবার দুপুরে মাদ্রাসায় গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। মাদ্রাসা সুপার বলেছেন, শনিবার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা বালাকাত উল্লাহ বলেন, ঘটনাটি কোনো ছাত্র বা তাদের অভিভাবক অভিযোগ করেনি। শুক্রবার থানার এস আই কামাল হোসেন ঘটনা তদন্ত করেছেন। শনিবার মাদ্রাসায় গেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।
রায়পুরের বামনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন মুন্সী বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামের আমির হওয়ায় প্রায় সময় ছাত্র-ছাত্রীদের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন। তার ভয়ে ছাত্র তো দূরের কথা, অন্য শিক্ষকরাও নিরুপায় বলে জেনেছি।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরীন চৌধুরী বলেন, এক সাংবাদিকের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিল বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সূত্র:যুগান্তর