২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিলেটে ১০ ঘণ্টার ব্যবধানে বসতি থেকে ৩ অজগর উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক।।
সিলেটের বালুচর, আলুরতল এবং মেজরটিলা এলাকার বিভিন্ন বসতবাড়ি থেকে তিনটি অজগর সাপ উদ্ধার করে বন বিভাগ। পরে সাপ তিনটি টিলাগড় ইকোপার্কে অবমুক্ত করা হয়।

সিলেট বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বালুচরের জোনাকি আবাসিক এলাকার শাহ আলম মেম্বারের বাড়ি থেকে একটি, আলুরতল এলাকার আব্দুল মান্নানের বাড়ি থেকে একটি এবং মেজরটিলার সৈয়দপুর এলাকার রাবেয়া বেগমের বাড়ি থেকে আরেকটি অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়।

প্রথমটি বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে, পরেরটি রাত সাড়ে ১২টার দিকে এবং সর্বশেষ শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ‘ভূমিসন্তান বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের কর্মীদের সহযোগিতায় সাপগুলো উদ্ধার করে বনবিভাগ।

ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবির জানান, আগে এই অঞ্চল এবং এর পার্শ্ববর্তী চা বাগান এবং টিলাগড় ইকো পার্ক এলাকা অজগর সাপের নিরাপদ চারণভূমি ছিল।

কিন্তু সম্প্রতি খাদ্য সংকটের কারণে এসব সাপ লোকালয়ে প্রবেশ করছে। সাপগুলো দেখার পর হত্যা না করে পরিবেশকর্মী ও বনবিভাগকে উদ্ধার করার জন্য জানানোয় স্থানীয়দের ধন্যবাদ জানান তিনি।

আশরাফুল কবির বলেন, ‘অজগর সাপ বিষাক্ত না এবং সাধারণত মানুষকে আক্রমণ করে না। তাই লোকালয়ে অজগর সাপ দেখা গেলে আতঙ্কিত না হয়ে বন বিভাগ বা পরিবেশকর্মীদের জানালে তারা উদ্ধার করে সাপটিকে রক্ষা করতে পারবেন।

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার সকালে উদ্ধার হওয়া অজগর সাপ তিনটি টিলাগড় ইকো পার্কের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অবমুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী জোহরা মিলা বলেন, “অজগর সাপটি নিশাচর র্নিবিষ। এটি খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া নড়াচড়াও করে না।

সাপটি গাছে একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না।

খাদ্য হিসেবে এরা ইদুর, ‍মুরগি, সাপ-কচ্ছপের ডিম, ছোট বন্যপ্রাণী ইত্যাদি খায়। এটি তার আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে। সাপটি পেটভরে খেতে পারলে দীর্ঘদিন না খেয়েও থাকতে।

জোহরা মিলা বলেন, চামড়ার জন্য সাপটি পাচারকারীদের লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ফলে আমাদের বনাঞ্চল থেকে এটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী এ বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত, তাই এটি হত্যা বা এর যে কোনো ক্ষতি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।

অজগর লোকালয়ে আসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাহাড় ও বন উজাড় হওয়ার কারণে সাপের আবাসস্থল সংকুচিত হয়ে গেছে। এতে তাদের খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই খাবারের সন্ধানে সাপগুলো লোকালয়ে আসছে।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!