স্পেনের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে ফাইনালে ইতালি
✒️স্পোর্টস ডেস্ক 🔴
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের এক ম্যাচ উপভোগ করল ফুটবলপ্রেমীরা। ইউরোর প্রথম সেমিফাইলের পুরো ম্যাচেই চলেছে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর।
ম্যাচটি ছিল আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ, গোল পাল্টা গোলের। নির্ধারিত সময়ে সমতা থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। গোল হলো না অতিরিক্ত সময়েও। তারপর পেনাল্টি শুট-আউট। আর সেখানেই কপাল পুড়ল স্পেনের।
ইউরোয় চলতি আসরের শুরু থেকেই দাপট ইতালির। এবার ৫৩ বছরের আক্ষেপ ঘুচানোর অপেক্ষা। মঙ্গলবার দিনগত রাতে স্পেনের বিপক্ষে ৪-২ ব্যবধানে জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করল রবার্তো মানচিনির শিষ্যরা।
লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে শুরুতেই ইতালির বারেল্লা অফসাইডের আওতায় পড়েন। ভেস্তে যায় ইতালির আক্রমণ। যদিও বারেল্লার শট এক্ষেত্রে পোস্টে প্রতিহত হয়। ৫ম মিনিটে ফের একবার ইতালির আক্রমণ থমকে যায় ইমোবিলের অফসাইডের আওতায় পড়ায়।
ম্যাচের ১৫তম মিনিটে ইতালির জালে বল জড়ানোর চেষ্টা করেন ফেরান তোরেস। তবে টার্গেটে ছিল না তার শট। ২৫তম মিনিটে দানি ওলমোর শট প্রতিহত করেন ইতালির গোলরক্ষক ডোনারুম্মা।
৩৩তম মিনিটে ফের ইতালির পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন ওলমো। কিন্তু বল ক্রসবারের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়। ৫ মিনিট পর মিকেলের শট ইতালির পোস্টের উপর দিয়ে মাঠের বাহিরে চলে যায়।
ম্যাচের ৪৫তম মিনিটে গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয় ইতালির। এমারসনের শট ক্রসবারে প্রতিহত হয়। সেয়ানে সেয়ানে লড়াইয়ে গোলশূন্যভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
বিরতি থেকে ফিরে ৪৯তম মিনিটে ইমোবিল স্পেনের রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা করেন। তবে তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। বল চলে যায় মাঠের বাহিরে। দুই মিনিট পর ইমোবিলকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন সার্জিও। এক মিনিট পর সার্জিওর ডানপায়ের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
এরপর ৫৩তম মিনিটে কিয়েসার শট প্রতিহত করেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক। ৫৮তম মিনিটে মিকেলের আক্রমণ প্রতিহত করেন ইতালির গোলকিপার ডোনারুম্মা।
এর দুই মিনিট পরেই জালের দেখা পায় ইতালি। স্পেনের শেষ ডিফেন্স ভেঙে গোলটি করেন ফেদেরিকো কিয়েসা। পরের মিনিটে ইমোবিলকে তুলে নিয়ে বেরারদিকে মাঠে নামায় ইতালি। এর পরের মিনিটে ফেরান তোরেসকে তুলে নিয়ে মোরাতাকে মাঠে নামায় স্পেন। একজন মিডফিল্ডারের বদলে স্ট্রাইকার নামিয়ে স্পেন তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট করে দেয়।
এরপর আবার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর! ম্যাচের ৬৭তম মিনিটে ওলমোর শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এক মিনিট পর বেরারদির শট প্রতিহক করেন উনাই।
ম্যাচের ৭০তম মিনিটে জোড়া বদলি খেলোয়ার নামায় স্পেন। মিকেল ও কোকের বদলে মোরেনো ও রদ্রিকে মাঠে নামায় তারা। ৪ মিনিট পর জোড়া বদলি নামায় ইতালিও। ভেরাত্তিকে বদলে মাতেওকে মাঠে নামায় তারা। এমারসনের বদলে মাঠে নামেন রাফায়েল।
ম্যাচের ৮০তম মিনিটে বেরারদির আক্রমণ প্রতিহত করেন উনাই। সঙ্গে সঙ্গেই সমতায় ফেরে লা রোহারা। পরিবর্তন হিসেবে মাঠে নেমেই গোলটি করেন মোরাতা।
এর ৩ মিনিট পর ইতালির জালে বল জড়ানোর চেষ্টা করেন সার্জিও। যদিও বল টার্গেটে রাখতে পারেননি তিনি। ৮৫তম মিনিটে বারেল্লা ও ইনসিনিয়েকে তুলে নিয়ে লোকাতেল্লি ও বেলোত্তিকে মাঠে নামায় ইতালি। একই সময়ে আপ্পিলিকুয়েতার বদলে স্পেন মাঠে নামায় মার্কোস লরেন্তেকে।
নির্ধারিত সময়ে সমতা থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ৯৮ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন ইতালির রাফায়েল। একই সময়ে ওলমোর আক্রমণ প্রতিহত করেন ডোনারুম্মা।
ম্যাচের ১০৫তম মিনিটে সার্জিওর বদলে স্পেন মাঠে নামায় আলকান্তারাকে। ২ মিনিট পর কিয়েসাকে তুলে নিয়ে বার্নারদেসচিকে মাঠে নামায় ইতালি। দুই মিনিট পর গার্সিয়াকে তুলে নিয়ে পাউ তোরেসকে মাঠে নামায় স্পেন। এক মিনিট পর ইতালির বেরারদি অফসাইডের আওতায় পড়েন। এরপর ১১৩ ও ১১৬তম মিনিটে অফসাইডের আওতায় পড়েন ইতালির বেলোত্তি।
শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করল ইতালি। অবশ্য মুখোমুখি দেখার লড়াইটা বেশ জম্পেশ এ দু’দলের। ২০১২ ইউরোর ফাইনালে ইতালিতে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল স্প্যানিশরা। পরের আসরের রাউন্ড অব সিক্সটিনে আবার প্রতিশোধ নেয় আজ্জুরিরা। জিতে যায় ২-০ গোলে। ২০১৭ তে দেখা হওয়া শেষ ম্যাচটায় আবার জয়ী হয় স্পেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ইতালিরই পালা হওয়ার কথা! আর সেটাই হলো।