২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনলাইনে সুন্দরীদের সঙ্গে আড্ডার লোভ দেখিয়ে ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক চক্র

অনলাইন ডেস্ক
সুন্দরী তরুণীদের সঙ্গে অনলাইনে আড্ডার লোভ দেখিয়ে লোকজনকে জুয়ার ফাঁদে ফেলতো চক্রটি। তাদের প্রধান টার্গেট যুবক এবং বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা। আড্ডায় ঢুকতে বিশেষ একটি অ্যাপ ব্যবহার করতে হতো। অনলাইনে এভাবে ফাঁদে ফেলে গত এক বছরে ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।

এমনই একটি প্রতারক চক্রের ২ সদস্যকে সিলেটের গোয়াইনঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন – নিধু রামদাস (২৭) ও মো. ফরিদ উদ্দিন (৪০)। এসময় তাদের কাছে থেকে লেনদেনে ব্যবহার করা ব্যাংক চেক বই, ডেবিট কার্ড, বিকাশ একাউন্ট নাম্বার এবং মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) মালিবাগে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান জানান, ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে ‘স্ট্রিমকার’ নামের অ্যাপটিতে সংযুক্ত হতেন ব্যবহারকারীরা। এই অ্যাপে দুই ধরণের আইডি রয়েছে। ব্যবহারকারীর আইডি ও হোস্ট আইডি। হোস্ট আইডি ব্যবহার করে বিশেষ কিছু চক্র অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তরুণীদের দিয়ে হোস্টিং করিয়ে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ উপার্জন করা হতো। তাদের টার্গেট মূলত যুবক এবং বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা। লাইভ স্ট্রিমিংয়ে আড্ডা দেওয়ার প্রলোভনে অ্যাপে ঢুকেন ব্যবহারকারীরা। এ জন্য বিনস নামের ভার্চুয়াল মুদ্রা কিনতে হয় তাদের। ওই মুদ্রা উপহার হিসেবে দিয়ে আড্ডায় যুক্ত হতে হতো ব্যবহারকারীদের।

তিনি আরো বলেন, বিশেষ ওই অ্যাপটির অনেক এজেন্ট রয়েছে বাংলাদেশ। তারাই ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা কেনাবেচা করেন। লক্ষাধিক বাংলাদেশি ব্যবহারকারী অনলাইন ব্যাংকিং, হুন্ডি, নেটেলার স্ক্রিল ও বিদেশি একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ডিজিটাল মুদ্রা কিনছে। এর মাধ্যমে প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এ ঘটনায় আমরা একটি মামলা করব। এছাড়া অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা পেলে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে গ্রেফতার করা হবে। গ্রেফতারকৃত নিধু রামদাসের ব্যাংক একাউন্টে এবং বিকাশ একাউন্টে গত এক বছরে ১০ কোটিরও বেশি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া গ্রেফতারকৃত ফরিদ উদ্দিনের ব্যাংক একাউন্ট এবং বিকাশ একাউন্ট থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে সিআইডি কাজ করছে। এছাড়া অন্যান্যদের বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাদের অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা এবং বিশ্লেষণ করে প্রায় ৩০ কোটি টাকার বেশি লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানায় সিআইডির ওই কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন – অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন, বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর, বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আবুল কালাম আজাদ।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!