সীতাকুণ্ডে ভাঙা হচ্ছে তিন ফুটবল মাঠের সমান জাহাজ
নিউজ টুডে
পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ জাহাজ এখন বঙ্গোপসাগরে উপকূল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে। তিনটি আন্তর্জাতিক ফুটবল মাঠের সমান বিশাল দানবাকৃতির জাহাজটি ভাঙার জন্য এনেছেন চট্টগ্রামের শিল্প গ্রুপ মোস্তফা হাকিম।
সীতাকুণ্ডে ভাঙা হচ্ছে তিন ফুটবল মাঠের সমান জাহাজ
পুরোনো হলেও তেলবাহী জাহাজটির মূল্য কিন্তু ২২৩ কোটি টাকা। বেশি দামে জাহাজ কেনার রেকর্ড এটিই প্রথম।
ইএম ভাইটালিটি নামে এই অয়েল ট্যাংকারটি বিশ্বের অন্যতম ১০টি বৃহৎ জাহাজের একটি। ২৩০ ফুট উঁচু সৌদি তেলবাহী জাহাজটির উপরে রয়েছে ৩৪০ মিটার লম্বা ১০টিরও বেশি পাইপ। যেগুলো দিয়ে ট্যাংকে ভরা হত জ্বালানি তেল।
আবার তেল স্থানান্তর করা হয় এক জাহাজ থেকে আরেক জাহাজে। ট্যাংকারটির ছাদে রয়েছে হেলি প্যাড। এখন এই শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে চলছে জাহাজটি ভাঙার মহাকর্মযজ্ঞ। মোস্তফা হাকিম গ্রুপের ১০ শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে চলবে এই কর্মযজ্ঞ।
চট্টগ্রামে মোস্তফা হাকিব গ্রুপের পরিচালক মো. সাইফুল আলম জানান, বিস্ময়কর জাহাজটি ভাঙাও বিরাট কর্মযজ্ঞের। শ্রমিকরা ইতোমধ্যে শুরু করেছে খণ্ড খণ্ড করে কাটার কাজ। যেটি ভাঙার পর পাওয়া যাবে ৪৮ হাজার ৮৭ টন লোহা। এ লোহা কাটতে ৫০০ শ্রমিকের ৬ মাস সময় লাগবে। ইস্পাত কারখানার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হবে এ লোহা। খরচের চেয়ে বাড়তি যা পাওয়া যাবে, তা উঠবে লাভের খাতায়।
জাহাজটি আমদানির জন্য প্রতিষ্ঠানকে দিতে হয়েছে ২০৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আর শুল্ককর দিতে হয়েছে ১৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
সীতাকুণ্ড এইচ এম শিপব্রিকিং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের ম্যানেজার পলাশ মজুমদার জানান, লোহা ছাড়া বাকি পণ্য সোফা, খাটের ম্যাট্রেস বিদ্যুতের নানা সরঞ্জাম পণ্য স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হবে। পাশাপাশি তামা, পিতল, কপারের মতো বেশ কিছু মূল্যবান পণ্য রপ্তানি করা হবে। আর কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
ইএম ভাইটালিটি শিপ ইনচার্জ মো. বেলাল উদ্দিন বলেন, তিন লাখ মেট্রিকটন জ্বালানি তেল ধারণ ক্ষমতার জাহাজটি ১৯৯৬ সালে তৈরি হয় জাপানে। ৮০০ কোটি টাকা দিয়ে তখন এটি কিনেছিল সৌদি আরব। মূলত আন্তর্জাতিক বাজার থেকে নিলামের মাধ্যমে বাল্ক ক্যারিয়ার, ওয়েল ট্যাংকার, কার ক্যারিয়রসহ নানা জাহাজ এনে কাটা হয় এ শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে।
এই জাহাজ ভাঙা শিল্পকে কেন্দ্র করে সীতাকুণ্ডের ফৌজাদার হাট থেকে কুমিরা পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে এক’শর বেশি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড। আর এ শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জড়িত ২ লাখ মানুষ।